মহাদেব





মহাদেব
-Dip Saha Chowdhury (#রোদ্দুর)

মহাদেব বা শিব... দেবাদিদেব... কিন্তু কে এই মহাদেব?? শত নাম তার কেউ বলেন মহেশ, কেউ বলেন রুপম , কেউ বলেন মহাযোগী। আচ্ছা ব্যাপারটা সহজ করা যাক। শিব যার আক্ষরিক অর্থ শুন্য। শুন্য কথার অর্থ কিছুই না। আবার শুন্য বলতে আমরা মহাকাশকেও বুঝি যার মধ্যে এই মহাবিশ্ব অবস্থান করছে। অর্থাৎ মহাবিশ্ব যা সবকিছু নিয়েই সমৃদ্ধ। যার মধ্যে সবকিছুই আছে অর্থাৎ শিব কথার অর্থ কিছু না আবার শিব মানে সবকিছু। শিব শব্দটি আদতে নিজেই নিজের বিপরীত প্রতি মুহূর্তে। যদি বলেন পুরান মতে এই মহাবিশ্বকে কে ধ্বংস করবেন একবাক্যে সবাই বলবেন মহাসংহারক মহাদেব। কথাটা সত্য। কিন্তু সৃষ্টি কে করবেন?? উত্তরও সেই মহাদেব। আসলে যখন এই মহাবিশ্ব বলে কিছু ছিলো না তখন কি ছিল? Physics বলে সেই সময় এমন এক অবস্থা ছিলো যাকে Time & Space Singularity বলা হয় অর্থাৎ তখন সমস্ত শক্তি আর ভর একত্রিত ভাবে ছিল বা আরো ভালোভাবে বললে এদের পৃথকভাবে অস্তিত্ব ছিল না। এবার কথা হল পৃথক করল কে?? Physics এর ভাষায় এই সময় একটি বিশাল বিস্ফোরণের দরকার হয়েছিলো যাকে Physics এর ভাষাতে Big Bang বলা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল আমি আগেই বলেছি যে Big Bang এর আগে শক্তি আর পদার্থ বলে কিছু ছিলো না। তাহলে বিগ ব্যাং এর জন্য যে শক্তির দরকার ছিল সেটা কে যোগান দিয়েছিলো?? এই শক্তির পরিমান নেহাতই কম নয়। অন্তত কোটি কোটি হিরোশিমার বোমা থেকে বেশি। হুম... কে দিলো?? কে দিলো?? আচ্ছা এই আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম কবে? চলুন ঘুরে আসা যাক। সালটা ১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৫৬৪। ইতালির পিসা শহরে জন্মগ্রহন করেন এক বিখ্যাত দার্শনিক।নাম গ্যালিলিও গ্যালিলি। দুরবিন দিয়ে তিনিই প্রথম বিঞ্জানের পরিধি প্রথম দেখেছিলেন। তাকেই বলা হয় আধুনিক বিঞ্জানের জনক। অর্থাৎ আধুনিক বিঞ্জানের গল্প শুরু হয় মোটামুটি ১৫৯০ সাল থেকে। কিন্তু আজ ২০১৮ , তাও বিঞ্জান জানেনা এর উত্তর যে বিগ ব্যাং এর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান কে দিয়েছিলো। তবে উত্তর কেউ দেয় নি তা না। বেদব্যাসের নাম আমরা অনেকেই জানি। তিনি মহাভারতের রচয়িতা। আদতে তিনি পুরানের রচয়িতাও বটে। শিব পুরান যার রচনা কাল এতই প্রাচীন যে তা উদ্ধার করা সম্ভব না যে কবে লেখা হয়েছে। শিব পুরানের এক অধ্যায়ে বলা আছে যে, এ শুন্যতে যখন কিছু ছিল না। সব মিলে একাত্ম হয়েছিল তখন আমার অর্থাৎ শিবের জন্ম হয়েছিল। আমি এক নৃত্য শুরু করি আমার নাম হয় নটরাজ। যা দ্বারা আমি শক্তি ও শক্ত অর্থাৎ পদার্থকে আলাদা করি আবার আমিই সে যে এ সৃষ্টিকে বিলিন করবো এই নৃত্যতে। কারো বাড়িতে যদি নটরাজের কোনো মূর্তি থাকে একটু খেয়াল করবেন শিবের চারিপাশে একটি বলয় আছে যার নিচের অংশে কিছু ঘুরেছে আর উপরের অংশে কিছু আভার মত ছড়িয়ে পড়ছে। যে অংশগুলি জমাট বেধে আছে সেগুলি আদতে পদার্থ আর যা ছুটে বেরোচ্ছে তা আদতে শক্তি যেগুলি frequency এর পার্থক্য অনুসারে আমরা কেউ আলো বলি, শব্দ বলি, তাপ বলি। যেহেতু তিনি সবার শুরুতে ছিলেন তাই তিনি দেবাদিদেব। যেহেতু তিনিই অন্তিমে থাকবেন তাই তিনি নিজের নাম দিয়েছেন অনাদি। কিন্তু সবই তো হল, কিন্তু এসব করে তিনি গেলেন কোথায়। পুরান বলে যে তিনই তারপর যেহেতু নিজেই একজন শক্তি আবার পদার্থের সৃষ্টিকারক তাই তিনি আজও শক্তিকে পদার্থে বা পদার্থকে আবার প্রতিমুহূর্তে রুপান্তরিত করছেন। বিঞ্জান অজান্তেই এর নাম দিয়েছেন God Particles। অর্থাৎ পুরান যা বিঞ্জানের জন্মের বহুবছর আগে এক বিঞ্জানেরই জন্ম দিয়েছিল যা সৃষ্টির গল্পই বলেছিলো।
এবার কথা হল সৃষ্টি তো শিব করেছেন ধংস তিনিই করবেন সেটা কি বিঞ্জান বলে?? যদি বলি হ্যাঁ। অজান্তেই। দেখুন আজ আমি যা লিখতে বসেছি তা কোনো এক রাতের স্বপ্ন নয়। ২০১২ সাল থেকে এ নিয়ে চর্চা শুরু করেছিলাম। আজ এ মহাসমুদ্রের যে সামান্য জলটুকু আমি অর্জন করতে পেরেছি তারই উত্তর এ প্রবন্ধ। বিঞ্জান থেকে আমরা জেনেছি যে সূর্য আর এক তারার সংঘাতে পৃথিবী সহ অন্য গ্রহের সৃষ্টি হয়েছিল। আবার বিঞ্জান বলে  যে যেদিন এই সূর্যের মধ্যে বিকিরন ও ভরের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে সেদিন এটি একটি ব্ল্যাক-হোলে পরিনত হবে।  আর ব্ল্যাক-হোল এই সৌর জগতকেই নিজের মধ্যে গ্রাস করবে। অর্থাৎ যে সৃষ্টি করেছিল এ সৌরজগৎ সেই একদিন বিলিন করবে। তারপর পাশের গ্যালস্কি তে যে সূর্য আছে তাও একদিন ব্ল্যাক হোলে পরিনত হবে। আর তা আমাদের ব্ল্যাক-হোলকে গ্রাস করবে। এভাবেই একদিন মহাবিশ্ব একটিই ব্ল্যাক হোলে পরিনত হবে অর্থাৎ আবার সেই Time & Space Singularity  আবার বিগ ব্যাং। এবার কথা হলো এখানে শিব কোথায়... হা হা দাদা... বলছি... বিঞ্জান কিছুকাল আগেই প্রমান করেছে সূর্য বা অন্য নক্ষত্র থেকে যে শব্দ নির্গত হয় তা “ওম”। আর শিব পুরান বলে মহাদেবের ডাম্রু থেকে একটাই শব্দ বেরোয়... “ওম”। এই ওম কি তা না হয় অন্য একদিন বলব?? আজ এটুকুই ... যদি ভালো লাগে। মনে লাগে । মতামত দেবেন। পরের অংশ তবেই দেব... আমার ঞ্জানের পাতা থেকে। ভালো থাকুন।

Comments

Popular posts from this blog

ফিউসবক্স (Sequel of কলেজস্ট্রিট)

“ওম”

♥ ♥ ব্যারিকেড ♥ ♥