• || কলেজস্ট্রিট || • -Dip Saha Chowdhury
মহত্মা গান্ধী স্টেশনের ভিড় ঠেলে যখন কলেজস্ট্রিটের রাস্তায় পা রাখলাম ঘড়ির কাঁটা তখন এগারো ছুঁয়েছে। সেই চেনা ভিড়ের শব্দ, পিঠে ব্যাগ নেওয়া যৌবনের কোলাহল তখন বসন্তের #রোদ্দুর’কে টেক্কা দিচ্ছে। সারি সারি বইয়ের দোকান তখন যেন বইপাড়ার নাম সাড়ম্বরে ঘোষণা করছে। এই সেই বইপাড়া যেখানে কাদম্বরী থেকে কৃষ্ণকলি। গোড়া থেকে দেবদাস, সঞ্চিতা থেকে সঞ্চয়িতা, পথের দাবি হোক বা পাঁচালি সবাই নিজস্বতা নিয়ে বিরাজমান। এই e-pub, kindle , pdf এর যুগেও তারা তিলোত্তমার সাথী। এই বই পাগলদের সাথী আজ আমিও। বিশ্বাস করুন বই এমন এক বন্ধু যে কনদিন বদলায় না। অন্তত মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়েও রঙ বদলাতে শেখেনি। বরঞ্চ সময়ের সাথে মলিন হয়েছে। বই খোঁজার নেশায় বুঁদ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে হঠাৎ খেয়াল হল পেটে ছুচো , ইঁদুর , বাঘ সবাই ডন মারছে, তো পেট পুজো করতে এক দোকানে ঢুকলাম। সত্যি বলছি খিদে কিনা জানি না, জীবনে অতো সুস্বাদু খাবার কখনো খাইনি। আগামি বছরগুলোতেও খাওয়া হবে কিনা জানি না। তো গোগ্রাসে গিলে দোকান থেকে বেড়িয়ে এলাম।
•••
পকেটের লিস্টটাতে চোখ বুলিয়ে দেখলাম ১১ টা বই আছে। তো বই খোঁজা শুরু করলাম। বই খোঁজা যখন শেষ হল তখন পৌনে দুটো বাজে। পকেটের ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠলো। দেখলাম ফেসবুক নোটিফিকেশন জমেছে অনেক গুলো। ভারী ব্যাগটা কাঁধে তুলে নোটিফিকেশনগুলিতে মুখ গুঁজে হাঁটা শুরু করলাম। একটা মেয়েলি কণ্ঠ বলে উঠলো “অ্যাঁই... অ্যাঁই অ্যাঁই...” হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুরুম... একজনের গায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। চোখে চোখ পড়তেই কেরকম যেন আলাদা ফিলিংস তৈরি হল। ঠিক যেন ব্যাকগ্রাউন্ডে “Ankho Mein Teri” এর solo version চলছে। মেয়েটির গলা খ্যাঁকড়ানিতে চমক ভাঙল। দেখলাম চারিপাশে লোক দেখছে। কেউ কেউ দন্ত বিকশিতও করছে। উঠে পড়লাম ।। মেয়েটি ও উঠে ধুলো ঝাড়তে লাগলো। আমি লজ্জামুখে বইগুলো তুলে দিতে লাগলাম। অকস্মাৎ মেয়েটি নিচু হয়ে কানে কানে বলল
“আপনার GF ম্যাসেজ করেছিলো বুঝি?” আমি একটু রাগি গলায় বললাম- “না... মানে হ্যাঁ... তাতে আপনার কি?”
মেয়েটি নাক ফুলিয়ে বলল “আরে মশাই, আপনি ধাক্কা দিলেন আবার রাগও দেখাচ্ছেন??”
আমি কোনমতে বইগুলি গুছিয়ে বললাম “ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমা করে দেবেন।”
এই বলে আমি পেছন ফিরতে যাবো অমনি মেয়েটি বলে উঠলো “আরে দাদা আপনার হাতের অনেকটা তো ছড়ে গেছে... দাঁড়ান”।
এই বলে সাইডব্যাগ থেকে একটা ডেটল আর কিছু তুলো বের করে বলল, “নিন, বেঞ্চটায় বসুন।”
আমি কিছুটা ইতস্তত করে বললাম “না না... ও ঠিক আছে”
মেয়েটি রাগ দেখিয়ে বলল “বসতে বলেছি তো...” আমি আর না করতে পারলাম না। মেয়েটি যত্নে জায়গাটায় ড্রেসিং করে দিলো।
বিশ্বাস করুন একটি ছেলের মন জয় করতে তার কেয়ার করুন। দেখবেন আপনার জন্য জীবনও সে দিয়ে দিতে রাজি।
আমি কিছুটা কৃতজ্ঞতার সুরেই বললাম “এক কাপ কফি হয়ে যাক।”
মেয়েটি ভ্রু উঁচু করে বলল- “বন্ধুত্ব করতে চান?? তাহলে এক কাজ করুন ওই দোকানের ডিম পাউরুটিই হোক। বড্ড খিদে পেয়েছে।”
খিদে তো আমারও খুব পেয়েছিল তাই খুশি খুশি একটি ছোট্ট হোটেলের দিকে পা বাড়ালাম।
পকেটের লিস্টটাতে চোখ বুলিয়ে দেখলাম ১১ টা বই আছে। তো বই খোঁজা শুরু করলাম। বই খোঁজা যখন শেষ হল তখন পৌনে দুটো বাজে। পকেটের ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠলো। দেখলাম ফেসবুক নোটিফিকেশন জমেছে অনেক গুলো। ভারী ব্যাগটা কাঁধে তুলে নোটিফিকেশনগুলিতে মুখ গুঁজে হাঁটা শুরু করলাম। একটা মেয়েলি কণ্ঠ বলে উঠলো “অ্যাঁই... অ্যাঁই অ্যাঁই...” হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুরুম... একজনের গায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। চোখে চোখ পড়তেই কেরকম যেন আলাদা ফিলিংস তৈরি হল। ঠিক যেন ব্যাকগ্রাউন্ডে “Ankho Mein Teri” এর solo version চলছে। মেয়েটির গলা খ্যাঁকড়ানিতে চমক ভাঙল। দেখলাম চারিপাশে লোক দেখছে। কেউ কেউ দন্ত বিকশিতও করছে। উঠে পড়লাম ।। মেয়েটি ও উঠে ধুলো ঝাড়তে লাগলো। আমি লজ্জামুখে বইগুলো তুলে দিতে লাগলাম। অকস্মাৎ মেয়েটি নিচু হয়ে কানে কানে বলল
“আপনার GF ম্যাসেজ করেছিলো বুঝি?” আমি একটু রাগি গলায় বললাম- “না... মানে হ্যাঁ... তাতে আপনার কি?”
মেয়েটি নাক ফুলিয়ে বলল “আরে মশাই, আপনি ধাক্কা দিলেন আবার রাগও দেখাচ্ছেন??”
আমি কোনমতে বইগুলি গুছিয়ে বললাম “ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমা করে দেবেন।”
এই বলে আমি পেছন ফিরতে যাবো অমনি মেয়েটি বলে উঠলো “আরে দাদা আপনার হাতের অনেকটা তো ছড়ে গেছে... দাঁড়ান”।
এই বলে সাইডব্যাগ থেকে একটা ডেটল আর কিছু তুলো বের করে বলল, “নিন, বেঞ্চটায় বসুন।”
আমি কিছুটা ইতস্তত করে বললাম “না না... ও ঠিক আছে”
মেয়েটি রাগ দেখিয়ে বলল “বসতে বলেছি তো...” আমি আর না করতে পারলাম না। মেয়েটি যত্নে জায়গাটায় ড্রেসিং করে দিলো।
বিশ্বাস করুন একটি ছেলের মন জয় করতে তার কেয়ার করুন। দেখবেন আপনার জন্য জীবনও সে দিয়ে দিতে রাজি।
আমি কিছুটা কৃতজ্ঞতার সুরেই বললাম “এক কাপ কফি হয়ে যাক।”
মেয়েটি ভ্রু উঁচু করে বলল- “বন্ধুত্ব করতে চান?? তাহলে এক কাজ করুন ওই দোকানের ডিম পাউরুটিই হোক। বড্ড খিদে পেয়েছে।”
খিদে তো আমারও খুব পেয়েছিল তাই খুশি খুশি একটি ছোট্ট হোটেলের দিকে পা বাড়ালাম।
•••
খাবারটা অর্ডার দিয়ে বসলাম । দেখলাম মেয়েটি বইয়ের মধ্যে কিছু একটা লিখে বইটি ব্যাগে ঢুকিয়ে আদো আদো গলায় বলে উঠলো,
- “আপনার নামটা জানা হল না”
- আজ্ঞ্যে, সম্বিত দাশগুপ্ত
- আমি শর্বরী সেন
এই বলে আমরা হাত মেলালাম। মেয়েটি ততক্ষণে নিজের ফোনে ব্যাস্ত আমাকে বলল
- আপনি কোথায় থাকেন?
- দমদম, আপনি??
- বেহালা, আপনি কী করেন?
- চাকরি খুঁজছি, আপনি?
- 1st year, বিদ্যাসাগর কলেজ, হুম আপনি ভালো লেখেনও বটে!
- মানে ?? আপনি কি করে জানলেন??
- ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি , দেখুন।
ইতিমধ্যে আমাদের খাবার হাজির। খেতে খেতেই মেয়েটি বলল
- তা কলেজস্ট্রিট হঠাৎ??
ফেসবুকটা খুলতে খলতে আমি বললাম
- কয়েকটা বই নিতে এসেছিলাম।
- তা সব বই নেওয়া হল??
- না একটা একটু অন্যরকম বই খুঁজছিলাম
- কী রকম?
- এই ধরুন একটু দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প
- খুঁজুন খুঁজুন,
- হাঁ সেই। আপনার আসার কারন ও কি তাই?
মেয়েটি ভ্রু কুঁচকে বলল
- আজ্ঞ্যে না। আপনার সাথে ধাক্কা খাওয়া...
মেয়েটিকে হাসতে দেখে আমারও একটু হাসি পেল। ততোক্ষণে আমাদের খাওয়া শেষ। বিলটা পে করে বেরতেই মেয়েটি বলল
- এখনো কি বই খুঁজবেন?
- আমি বললাম, ইচ্ছে তো করছে না কিন্তু আজ না নিয়ে গেলে কবে আসবো তারও ঠিক নেই।
- Wait
এই বলে মেয়েটি ব্যাগ থেকে একটা বই বের করে বলল –
- “এটা পরে দেখবেন। How We Fell in Love – D. Chowdhury”
- কিন্তু আপনাকে পাবো কোথায় ?? ফেরত দেওয়ার জন্য?
- কোন একদিন ধাক্কা খাওয়ার জন্য আবার একদিন আসবেন।
- মানে??
- মানে মান কচু। খেলে গলা ধরে। এবার বাড়ির রাস্তা ধরুন। এখন মেট্রোতে জায়গা পেলে হয়। আমিও ট্যাক্সি ধরি। তাহলে আবার দেখা হবে।
- আমিও বললাম আশা করি...
এই বলে দুজন বিপরীতমুখি রাস্তা ধরলাম। বিকেলের আলো তখনো আমার মোবাইলের স্ক্রীনে এসে দিনের অন্তিমকে স্বাগত জানাচ্ছে।
খাবারটা অর্ডার দিয়ে বসলাম । দেখলাম মেয়েটি বইয়ের মধ্যে কিছু একটা লিখে বইটি ব্যাগে ঢুকিয়ে আদো আদো গলায় বলে উঠলো,
- “আপনার নামটা জানা হল না”
- আজ্ঞ্যে, সম্বিত দাশগুপ্ত
- আমি শর্বরী সেন
এই বলে আমরা হাত মেলালাম। মেয়েটি ততক্ষণে নিজের ফোনে ব্যাস্ত আমাকে বলল
- আপনি কোথায় থাকেন?
- দমদম, আপনি??
- বেহালা, আপনি কী করেন?
- চাকরি খুঁজছি, আপনি?
- 1st year, বিদ্যাসাগর কলেজ, হুম আপনি ভালো লেখেনও বটে!
- মানে ?? আপনি কি করে জানলেন??
- ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি , দেখুন।
ইতিমধ্যে আমাদের খাবার হাজির। খেতে খেতেই মেয়েটি বলল
- তা কলেজস্ট্রিট হঠাৎ??
ফেসবুকটা খুলতে খলতে আমি বললাম
- কয়েকটা বই নিতে এসেছিলাম।
- তা সব বই নেওয়া হল??
- না একটা একটু অন্যরকম বই খুঁজছিলাম
- কী রকম?
- এই ধরুন একটু দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প
- খুঁজুন খুঁজুন,
- হাঁ সেই। আপনার আসার কারন ও কি তাই?
মেয়েটি ভ্রু কুঁচকে বলল
- আজ্ঞ্যে না। আপনার সাথে ধাক্কা খাওয়া...
মেয়েটিকে হাসতে দেখে আমারও একটু হাসি পেল। ততোক্ষণে আমাদের খাওয়া শেষ। বিলটা পে করে বেরতেই মেয়েটি বলল
- এখনো কি বই খুঁজবেন?
- আমি বললাম, ইচ্ছে তো করছে না কিন্তু আজ না নিয়ে গেলে কবে আসবো তারও ঠিক নেই।
- Wait
এই বলে মেয়েটি ব্যাগ থেকে একটা বই বের করে বলল –
- “এটা পরে দেখবেন। How We Fell in Love – D. Chowdhury”
- কিন্তু আপনাকে পাবো কোথায় ?? ফেরত দেওয়ার জন্য?
- কোন একদিন ধাক্কা খাওয়ার জন্য আবার একদিন আসবেন।
- মানে??
- মানে মান কচু। খেলে গলা ধরে। এবার বাড়ির রাস্তা ধরুন। এখন মেট্রোতে জায়গা পেলে হয়। আমিও ট্যাক্সি ধরি। তাহলে আবার দেখা হবে।
- আমিও বললাম আশা করি...
এই বলে দুজন বিপরীতমুখি রাস্তা ধরলাম। বিকেলের আলো তখনো আমার মোবাইলের স্ক্রীনে এসে দিনের অন্তিমকে স্বাগত জানাচ্ছে।
•••
মেট্রোতে অনেক কষ্টে উঠলাম। হঠাৎ ফেসবুকে ম্যাসেজ শর্বরী সেন “ও মিস্টার আপনাকে বই ফেরত দেওয়ার চিন্তা করতে হবে না। শেষ পাতায় তার উত্তর আছে।”
সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের শেষ পাতায় গিয়ে দেখি একটা নাম্বার লেখা- “7*********”
আমার মুখে একটা চওড়া হাসি ফুটে উঠলো । এটা বইপাড়া এখানে জীবন সাহিত্য সব একাকার। সাহিত্যরাই সত্যি
মেট্রোতে অনেক কষ্টে উঠলাম। হঠাৎ ফেসবুকে ম্যাসেজ শর্বরী সেন “ও মিস্টার আপনাকে বই ফেরত দেওয়ার চিন্তা করতে হবে না। শেষ পাতায় তার উত্তর আছে।”
সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের শেষ পাতায় গিয়ে দেখি একটা নাম্বার লেখা- “7*********”
আমার মুখে একটা চওড়া হাসি ফুটে উঠলো । এটা বইপাড়া এখানে জীবন সাহিত্য সব একাকার। সাহিত্যরাই সত্যি
Comments
Post a Comment