। যেভাবে পেয়েছিলাম তাকে । - Dip Saha Chowdhury

প্রতিদিনের মতো বিকেল থেকে পার্কের বেঞ্চে বসে আছি। সবে সন্ধ্যে নামতে শুরু করেছে। রাস্তার পাশে আলোগুলি একে একে অন্ধকারের মাঝে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে রাস্তাগুলিকে আলোর চাঁদরে ঢেকে দিচ্ছে। দূরে ছেলেরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সময় একটা মিষ্টি গলা পিছন থেকে বলে উঠল।
- আচ্ছা একটু বসতে পারি??
ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখলাম একটা মেয়ে । বয়েস আমার মতোই হবে ২০-২২, সুন্দরী, মুখটা মায়াবী। চলতি ভাষায় যাকে বলে গুবলু গুবলু। একটু গলা খাঁকড়িয়ে বললাম
- হুম বসুন।
সত্যিকারে বলতে কি নতুন কন কারো সাথে কথা বলতে আমার একটু ইতঃস্ততঃ বোধ হয়। ছোটবেলা থেকেই এরকম আমি । মেয়েটি পাশে বসে বলল
- আপনাকে প্রতিদিন এখানে দেখি তাই ভাবলাম আলাপ করি। Hi. আমি কাল্পনিকা , কাল্পনিকা সেন।
এই বলে সে হাতটা বাড়িয়ে দিলো। আমি সৌজন্যবোধে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম
- আমি শঙ্খ চৌধুরী
একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম হাতটা খুব ঠাণ্ডা। শীতকাল তবুও এতো ঠাণ্ডা হওয়াটা অস্বাভাবিক। কিন্তু কথাটা অতটা গুরুত্ব দিলাম না। মেয়েটি বলল
- আচ্ছা আপনার বয়েস কত?
- ২২
- ও তাহলে তো সমবয়েসি। তাহলে তুমি বললে প্রবলেম আছে?
আমি একটু হেসে বললাম
- একদমই না
- তুমি প্রতিদিন একা একা বসে থাকো । খারাপ লাগে না।
- না... বরং না বসে থাকলে খারাপ লাগে।
- ও... ব্রেকআপ...
- না। আমি একতরফা ভালবাসি।
- ওহ।। সরি।।
- আরে না না ।। তুমি কোন পড়াশুনা করছ?
- করতাম...
- করতাম মানে??
- করতাম মানে... যখন বেঁচে ছিলাম?
কথাটা শুনে চমকে গেলাম...
মেয়েটি আমার অবস্থা দেখে জোরে হেসে দিলো আর বলল
- সব ভুত এক হয়না । ঘাড় মটকাতে আমি আসি নি।। ঘামটা মোছো।।

তারপর সেই মেয়েটাই আমার সব দুঃখে,প্রতি বিকেলের সাথি হয়ে দুঃখগুলি নিজের করে নেয়। সত্যি সব ভুত এক হয় না
এভাবেই পেয়েছিলাম কাল্পনিকাকে। সে হয়তো এই পৃথিবীর অংশ নয়। তবুও কেন জানি না আমার কথাগুলো শুনতে চায় সে।। এটাই জগত। অদ্ভুত্‌... কিম্ভুত...

Comments

Popular posts from this blog

ফিউসবক্স (Sequel of কলেজস্ট্রিট)

“ওম”

♥ ♥ ব্যারিকেড ♥ ♥