A Childish Love Story (এক অপরিণত ভালোবাসা)
A Childish Love Story (এক অপরিণত ভালোবাসা)
-
Dip Saha Chowdhury
“আপনার হৃদয়ে প্রেম রাখুন. এটা ছাড়া একটি জীবন রৌদ্রহীন বাগানের মতো যেখানে সব মৃত ফুলের বাস...” – Oscar Wilde
দুপুর থেকেই মেজাজটা গরম হয়ে রয়েছে ইমনের। ধুর এভাবে আর চলা যায় না। এতো পড়ার পরও পরীক্ষায় ৬২% । তারপর আবার বাবার সই নিয়ে আসতে বলেছেন স্যার।
এক পড়ন্ত বিকেলের ঘাসের দিকে তাকিয়ে এসবই মাথায় আসছে ইমনের। হঠাত একটা চেনা সুর
কানে আসতে হুস ফিরলো।
-
ওই!! শোন... তোর
সাথে কিছু জরুরি ব্যাপার সাল্টানোর আছে।।
ইমন পিছনে ফিরে দেখে
রাগিনী এক গম্ভীর মুখ করে দাড়িয়ে আছে... মানে একটা বড়সড় ঝামেলা বাঁধবার Plan করছে।
-
দেখ ভালো লাগছে
না। স্যার সই করতে বলেছে । আর জানিনা বাড়িতে গেলে কপালে কি আছে।
সামান্য ভ্রুটা উপরে তুলে
রাগিণী বললঃ
-
ওসব পরে হবে ।
কপালে তো তোর এমনিই দুঃখ আছে। এটা কী ??
ইমন দেখলো রাগিনীর হাতে
একটা সাদা কাগজ ভাঁজ করা। একটু খেয়াল করতেই তার গলা শুকিয়ে এলো। সে এলপাথারি তার
স্কুলব্যাগের পকেটগুলি খুঁজতে লাগল। হ্যাঁ সে যা ভেবেছে তাই। ওটা আজ থেকে প্রায় ৫
বছর আগে লেখা একটা প্রেমপত্র। রাগিনীর জন্য লিখেছিল কিন্তু ভয়ে দিতে পারেনি।
তাছাড়া সে শুনেছিল যে ওর একটা বয়ফ্রেন্ড আছে। ইমন ভেবে নিল আজ তার কপালে সত্যি আছে
কিছু দুর্ভোগ। একটু ইতঃস্ততঃ করে সে বলল –
-
ইয়ে... মানে ওটা
কিছু না। আর তোর সাহস কী করে হল কারো Personal জিনিসে হাত দেওয়ার।
একটু রেগে গিয়ে রাগিনী
বলল
-
ও... এর আগে তো
বলতি... যা তোর তা আমার... আর আজ বদমাইশিটা ধরার পর সব personal হয়ে গেল??
এই বলে রাগিনী একটু জোরে কান্নার নাটক শুরু করলো। ইমন দেখল কেস জন্ডিস। সঙ্গে
সঙ্গে ও বলল আরে কাঁদিস না। অমনি রাগিনী পাশে এসে বসে বলল।
-
কেন কেন?? তোর
কষ্ট হচ্ছে বুঝি।
চোখে সেই চেনা দুষ্টুমি। ইমন
বলল
-
ও আচ্ছা এসব নাটক
হচ্ছিলো??
-
হ্যাঁ। এবার
বল... চিঠিটা দিস নি কেন?? হুলো...
-
ভয় পেতাম যদি
বন্ধুত্বটা হারিয়ে ফেলি।। আর তাছাড়া তোর তো একটা বয়ফ্রেন্ড ছিল।
-
কে ওই মোটুরাম??
আরে ওই মোটা তো আমাকেই গেলার প্ল্যান করছিলো.
এই বলেই ফিকফিক করে হেসে
দিলো রাগিণী।
ইমন এবার একটু সাহস এনে
বলল
-
তার মানে আমাকে accept করতে তোর কোন problem নেই??
চোখটা ছোট করে রাগিনী বলল
-
আছে। আমি এরকম
ভীতুর ডিমের সাথে প্রেম করতে চাই না।
-
আচ্ছা আমি বদলে
যাব। তাহলে...?
-
আমার বাবাকে বলতে
পারবি?
-
ও কোন প্রবলেমই
না বস। কাকু তো এমনিতেই আমার উপর ফিদা।
-
এই দাঁড়া তো ।
তোর আমার বাবার সাথে কোন চক্কর আছে নাকি। তাই বলি আমার ওরকম নাদুস নুদুস মার্কা
বাবাটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে কেন??
এই কথা শুনে ইমন চোখ চোখ
বড় বড় করে তাকিয়ে থাকল। তাই দেখে রাগিনী বলল
-
ওমন ভাবে দেখোনা
শোনা।। আমি পাগল হয়ে যাই ।
-
সে তুই পাগল হলেও
তোকেই ভালবাসবো। এবার বল রাজি?
-
আগে propose কর। হাঁটু গেঁড়ে।
ইমন পাশের গাছ থেকে একটা গাঁদা ফুল ছিঁড়ে এনে মাটিতে হাঁটু গেঁড়ে বসলো। এই
দেখে রাগিণীতো হেসে লুটোপুটী খাচ্ছে।
-
Ragini . . Will you be my girl friend??
-
প্রতিদিন ফুচকা
খাওয়াবি?
-
হ্যাঁ খাওয়াবো ।
-
রোজ ফোন করবি?
-
হ্যাঁ
-
মাসে একবার ঘুরতে
নিয়ে যাবি??
-
যাবো।
-
কখনো কষ্ট দিবি
না??
-
না
-
যদি কখনো রেগে
চলে যাওয়ার কথা বললে যেতে দিবি না তো ?
-
ধরে।। বেঁধে নিয়ে
আসবো।
এই কথা শুনে রাগিনী ইমনকে জড়িয়ে ধরল। ইমন অনুভব করলো ওর কাঁধটা ভিজে যাচ্ছে।
রাগিনী কাঁদছে। ইমন বলল।
-
কাঁদছিস কেন?
-
এই দিনটার জন্য
কতদিন অপেক্ষা করেছি
-
বলিস নি কেন?
-
কখনো যদি Dictionary এর ১৪৬ পাতা খুলিস তাহলে দেখবি ওখানে একটা চিঠি আছে। তোকে
লিখেছিলাম। কিন্তু উত্তর পাইনি।
-
এমন একটা বই বেছে
নিলি। যা আমি কোনদিন খুলি নি পাগলি।
চোখ মুছে ইমনের গালটা
টিপে দিয়ে একটা চুমু খেয়ে রাগিনী বলল
-
I love you my পাগল। দে তোর খাতাগুলি দে। সই করে দি।
-
তুই জানতি যে
আমার সই করাতে হবে?
-
তোর মন খারাপ
দেখেই আমি তোর ব্যাগ থেকে খাতাগুলি বেড় করে সই করতে গিয়ে চিঠিটা পাই।
-
তুই আমাকে এতটা
ভালবাসিস??
-
না। পাশের বাড়ির
দাদাটাকে ভালোবাসি। যতসব । দে দে।। আমার বরকে তো আমারই বাঁচতে হবে।
খাতাগুলি সই করে ব্যাগে
ঢুকিয়ে উঠে পরে দুজনে। পাশাপাশি চলতে চলতে ইমনের ইচ্ছা হয় রাগিনীর হাতটা ধরতে। কিন্তু
ইতঃস্ততঃ করতে থাকে। বাঁকা চোখে সবই টের পায় রাগিনী । তাই হাতটা নিজেই জড়িয়ে ধরে
সে। বলে-
-
এই ভীতুটাকে নিয়ে
আমি কি করি।।
এভাবেই দুটো ছায়ামূর্তি
দুর-দূরান্তে পা বাড়ায়। ভালোবাসার পথে নতুন যাত্রী তারা হেঁটে যাবে তারা বহুদুর।
হয়তো তোমাদেরই মতো।
এই গল্প পড়ে তোমাদের মনে
হতে পারে এর লেখক হয়ত প্রেমিক মানুষ। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস
করি না, তবে ভাল থাকায় করি।
Comments
Post a Comment